স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে ৭টি ছোট ছোট বিষয় রয়েছে যা আপনি ১০ মিনিটেই করে ফেলতে পারেন

Share

মানুষ জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসার জন্য ভাবে ‘পরিবর্তন’ কিছু বড় বড় সিদ্ধান্তের ফল।

“আমাকে শহর বদলাতে হবে”

“আমাকে ক্যারিয়ার বদলাতে হবে”

“আমাকে একটা বড় কাজ শুরু করতে হবে”

এই বিষয়গুলোও কাজে আসতে পারে, কিন্তু এমন কিছু ছোট ছোট বিষয় রয়েছে যা জীবনে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।  

১। সকালে স্বাস্থ্যকর নাস্তা তৈরি করতে শেখা

‘কঠিন’ তকমাটি রান্নার গায়ে কখন লাগলো? এটি জীবনের অন্য বিষয়গুলোর চেয়ে মোটেই কঠিন নয়। এর জন্য শুধু একটু ধারণার প্রয়োজন। প্রতিদিন সকালে মাত্র ১০ মিনিটের জন্য আপনি সকালের নাস্তার জন্য কি রান্না করা শিখতে চান তা গুগলে অথবা ইউটিউবে সার্চ দিন। এরপর নির্দেশনা অনুসরণ করুন এবং রান্না করে ফেলুন। প্রতিদিন ১০ মিনিট, সপ্তাহে ৭ দিন অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে এক ঘন্টার কিছু বেশি সময়ের চর্চা। এভাবে এক মাস, ৩ মাস, এক বছর এবং আপনি শুধু একজন ভালো রাঁধুনিই হয়ে উঠবেন না বরং প্রতিদিন সকালে নিজের একটি ভাল ভিত্তি গড়ে তুলতে পারবেন। নতুন কিছু শিখুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান।

২। যোগব্যায়াম, বুকডন, পেটের ব্যায়াম

আপনি কেমন বোধ করছেন তার সবচেয়ে ভালো নির্দেশক হচ্ছে আপনার শরীর। আপনার শরীরের সাথে আপনার মনের যোগসূত্র যত ভালো হবে তত ভালো আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শরীরের আসলে কী প্রয়োজন। ঘুম? খাবার? নাকি বিশ্রাম? আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে মেরুদণ্ড বাঁকা করে বসে থাকে। এতে আমাদের দেহ গঠন নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিন ১০ মিনিট করে, সম্ভব হলে কয়েক ঘন্টা পরপর কিছু শারীরিক ব্যায়াম করুন। এক্ষেত্রেও ইন্টারনেট আপনাকে উপায় বলে দেবে। যোগব্যায়াম, বুক ডন, পেটের ব্যায়াম এসব কীভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে আপনার যদি কোন ধারণা না থাকে তাহলে ইন্টারনেটে খুঁজুন। দিনে মাত্র ১০ মিনিট আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে, আপনাকে সবল করে তুলবে এবং ভাল অঙ্গবিন্যাস বজায়ে রাখতে সাহায্য করবে।  

৩। শ্বাসক্রিয়া চর্চা

যদি হতাশাজনক মিটিং-এ ক্রুদ্ধ বিস্ফোরণ আপনার প্রতিদিনের রুটিনের অংশ হয় তাহলে এটি বিশেষভাবে আপনারই জন্য। শ্বাসক্রিয়া চর্চা শেখা খুব সম্ভবত সবচেয়ে সহজ কাজগুলোর একটি। আপনি শুধু শ্বাস নেবেন কিন্তু এর ফলাফল অভাবনীয়। মাত্র ১০ মিনিট আপনি আপনার শ্বাসক্রিয়ার প্রতি মনোনিবেশ করুন। পরবর্তী প্রজেক্টের জন্য কোন দুশ্চিন্তা নয়। কখন কোন কাজ বাকি পড়ে আছে তা নিয়ে কোন চাপ নয়। শুধু ১০ মিনিট শ্বাস নিন এবং তারপর আপনি অভিভূত হবেন যে আপনি কতটা নির্ভার, শান্ত এবং স্থির বোধ করছেন। মানসিক চাপের মধ্যে কেউ কখনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

৪। সৃজনশীল মস্তিষ্ক আলোড়ন

অন্য সবকিছুর মত সৃজনশীলতাও এক ধরনের পেশি যার ব্যায়াম প্রয়োজন। যদি আপনি আপনার এই সৃজনশীল পেশি সতেজ রাখতে চান এবং প্রয়োজনের সময় কিভাবে আরো সৃজনশীল হয়ে ওঠা যায় তা শিখতে চান তাহলে আপনার অনুশীলনের প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিদিন ১০ মিনিটের মধ্যে আপনার আগ্রহ রয়েছে এমন ১০ টি পরিকল্পনার কথা লিখে ফেলুন। ১০ টি পরিকল্পনা, আপনি মনে করেন যা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত মজাদার অথবা দারুণ হবে। সেগুলো আপনি যা চান তাই হতে পারে। কিন্তু সেগুলো লিখে রাখুন। এই কাজটি কিছুদিন করুন এবং তারপর দেখবেন আপনার সৃজনশীলতা উপচে পড়ছে।

৫। চিনি খাওয়া যাবে না

বিশেষ করে আমেরিকায় খুবই সাধারণ একটা হালকা খাবার হলো চিনি। ফল অথবা ‘নিউট্রিশন বার’ যাই হোক না কেন তাতে চিনি থাকবেই। আপনি এই মুহূর্তে এমন কিছু জেনে নিতে পারেন যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি তা হলো আপনি যেসব হালকা খাবার খান তার মধ্যে চিনি সবচেয়ে ক্ষতিকর। বিশেষ করে অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকার পর এটি বেশি ক্ষতি করে। যখন আপনি চিনি খান তখন তা শরীরের ইনসুলিনকে অকেজো করে দেয়। যখন ইনসুলিন অকেজো হয়ে যায় তখন আপনার শরীর এই সংকেত পায় যে আপনার শরীরে এই মাত্র খাবার প্রবেশ করেছে। তখন শরীর নিশ্চিত হতে পারে না যে এরপর শরীরে কখন খাবার প্রবেশ করবে। ফলে শরীরের জমানো চর্বির দহন থামিয়ে দেয় কারণ শরীর নিশ্চিত করতে চায় যেন পরের খাবারের সময় এটি আবার করতে পারে। আপনার শরীর সিদ্ধান্ত নেয়, “এখন আমার চর্বি জমিয়ে রাখা উচিত”।

৬। প্রতিদিনের ভাবনাগুলো লিখে ফেলা

ডায়রি লেখা এক ধরনের চিকিৎসা হতে পারে। যদি আপনি মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে সময় পার করছেন অথবা কোন বিষয়ে আপনার আরো গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার তাহলে আপনার ডায়রি বের করুন। আপনার যা মনে আসছে তাই ১০ মিনিট ধরে লিখুন। লেখাটা নিখুঁত হতে হবে বা কেউ এটা পড়বে এসব ভাবার কোন দরকার নেই। আপনার ডায়রি আপনার জন্য এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি নিজেকে ইচ্ছেমত ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিতে পারবেন, আপনার সব ভাবনার প্রকাশ ঘটাতে পারবেন। যখন আপনি এটি নিজের সামনে ধরবেন তখন আপনি আপনার চিন্তাগুলো নিয়ে সবচেয়ে ভালোভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি স্পষ্ট ধারণা পাবেন।  

৭। পড়া অথবা গান শোনা

অনেকসময় ১০ মিনিটের আউটপুটের চেয়ে ১০ মিনিটের ইনপুট বেশি ভালো বিশেষ করে যখন আপনি অবসন্ন বোধ করছেন তখন। মানুষের একটা বিরাট ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে তারা মনে করে যখন তারা ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়বে তখন তাদের কিছু করা উচিত। তাদের যা করা উচিত এটা তার ঠিক উল্টো। আপনার যা করা উচিত তা হলো এসময় কিছুই করবেন না। আপনার নতুন কিছুর নির্যাস নিতে হবে। এজন্য ১০ মিনিট চুপচাপ কিছু পড়ুন অথবা গান শুনুন এবং তারপর আপনি আবার নিজেকে পুনরোদ্যমে কাজ করার জন্য ফিরে পাবেন।

লিখেছেন নিকোলাস কোল।

www.inc.com এ পূর্বপ্রকাশিত।  

আপনি উদ্যমী!
আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান?  

তাড়াতাড়ি সাবস্ক্রাইব করুন।

আমাদের সেরা কনটেন্ট আপনার ইমেইলে পৌছে যাবে প্রতি সপ্তাহে।  

Invalid email address
আপনি যেকোনো সময় আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।  

মন্তব্য করুন