সাফল্য ও প্রাচুর্য্য পাওয়ার দশটি পথ

Share

আমার লক্ষ্য ছিল পেশাদার খেলোয়াড় হওয়া। হাই স্কুলের সময়ে আমি অসম্ভব পরিশ্রম করেছি, বহু চেষ্টায় অনেক কষ্টের পর নিজের লক্ষ্যে পৌঁছেছি। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছি। আমার সব স্বপ্ন আর সাধনা নষ্ট করে দেয় একটি দূর্ঘটনা। দিনের পর দিন অক্ষম আর রাগী আমি আমার বোনের বাড়িতে পড়ে ছিলাম। ঠিক সময়ে না এগোলে হয়তো এখনো সেখানেই থাকতাম।

একটা সময় আমি জানতে পারলাম যে, আর কিছু নয়; আমি নিজেই নিজেকে সামনে এগোতে দিচ্ছি না। আমার মানসিকতা না পাল্টালে এখনো পর্যন্ত আমি বোনের বাড়ির কাউচেই পড়ে থাকতাম আর বর্তমানের এই সাফল্য পেতাম না। আমি কী করে প্রাচুর্য্যের মধ্যে বাঁচতে হয় তা শিখেছি।

কোচ ক্রিস লী আমাকে শেখান কী করে প্রাচুর্য্যের মধ্যে বাঁচতে হয়। প্রাচুর্য্য মানে কিন্তু অনেক টাকা কিংবা সম্পদ থাকা নয়। নিজেকে জানা, নিজে কী পাচ্ছি সেটা জানা দরকার। নিজের প্রাপ্তি সম্পর্কে সচেতন থাকলে এবং সেই কথা স্বীকার করলেই প্রাচুর্য্য আসে। প্রতিদিন ঘুমাতে যাবার আগে শেষ যে মানুষটির সাথে আমি কথা বলি, তাকে আমি আমার জীবনে ঘটা সবচাইতে সেরা তিনটি ব্যাপার নিয়ে কথা বলি। আমি যে কৃতজ্ঞ সেটা জানাই। এটাই আমার প্রাচুর্য্য।

ক্রিস লী’র কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। বিশেষ করে তার সাথে করা পডকাস্ট – জীবন আর ব্যবসাকে সাফল্যমন্ডিত  করে তুলতে সাফল্য ও প্রাচুর্য্যের দশটি উপায়ের কথা না বললেই নয়। এই কথাগুলো আমাকে সাহায্য করেছে। আমি নিশ্চিত, আপনাকেও করবে।

১। আজকে কী দিচ্ছেন?

প্রতিদিন জিজ্ঞেস করুন নিজেকে- আজকে আমি কিভাবে অবদান রাখতে পারি? পুরোপুরি নিস্বার্থভাবে চারপাশের মানুষের জন্য কিছু করুন। কারণ, দিনশেষে আপনি যতটা দেবেন ঠিক তার কয়েকগুণ ফিরে পাবেন।

২। নিজেকে মুক্ত করুন

নিজের মধ্যে নেতিবাচক মানসিকতাকে ঝেড়ে ফেলুন। মনের মধ্যে কোনো নেতিবাচক ব্যাপার থাকলে আপনি ভালো কোনো কাজ করবেন কীভাবে আর ভালো থাকবেনই-বা কীভাবে? তাই যেকোন ব্যাপারে অন্তত নিজের কাছে নিজেকে স্বচ্ছ রাখুন। আপনি কী ভাবছেন, আপনি কী জানেন সেটা সম্পর্কে নিশ্চিত হন।

৩। সততা বজায় রাখুন

সততা খুব চমৎকার একটি ব্যাপার। আপনি যখন জানবেন যে, আপনি নীতিগতভাবে ঠিক এবং সত্যি কথা বলছেন, তখন যতটা শক্তি আপনার কথার মধ্যে থাকবে সেটা আর কারো কথায় থাকবে না। কথা অনুযায়ী কাজ, আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরিতে সাহায্য করবে।

৪। ভবিষ্যৎকে কল্পনা করুন

আমি যখন ফুটবল খেলতাম, তখন কিছু হওয়ার আগে আমি সেটা কল্পনা করার চেষ্টা করতাম। আর ব্যবসার ক্ষেত্রেও ঠিক একই কাজটি করি। কোনোকিছু করার আগে সেটা কল্পনা করে নিলে আপনি বুঝতে পারবেন যে কোন কাজটি আপনি করতে চাচ্ছেন আর কোন কাজটি করতে চাচ্ছেন না।

৫। ইতিবাচক চোখে পৃথিবীকে দেখুন

ইতিবাচকভাবে কোনকিছু দেখার অর্থ, নিজের কাজে এবং ব্যবসায় যেকোনো নতুন চ্যালেঞ্জকে আপন করে নেওয়া। কোন কাজগুলো আপনার কাছে চ্যালেঞ্জিং লাগছে? সেগুলো নিজের লক্ষ্য বানিয়ে নিন।

৬। লক্ষ্য নিয়ে স্বপ্ন দেখুন

ওয়াল্ট ডিজনি বলেছেন – “যদি তুমি কোনো কিছুর স্বপ্ন দেখ, তাহলে তুমি সেটা করতে পারবে”। প্রায় দশ বছর আগে, আমি প্রতি বছর নতুন একটি কিংবা দুইটি লক্ষ্য নেওয়া শুরু করি। সেগুলোকে এরপর কাগজে লিখে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখতাম আমি। বারবার এতে করে আমার মনে পড়তো যে আমার কী করতে হবে।

৭। কাজ করুন নিয়মিত

একবার আমি কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করলে, সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রতিদিন একটু একটু করে কাজ করে যাই। লক্ষ্য অর্জনের জন্য সেটা নিয়ে কেবল ভাবি না, বরং নিয়মিত কাজ করে যাই। আপনিও তেমনটাই করুন।

৮। ব্যর্থতা মেনে নিন

এখানে মেনে নেওয়া বলতে হেরে যাওয়ার কথা বলছি না, বলছি সহজভাবে নেওয়ার কথা। ফলাফল সবসময় একরকম হবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। অনেকসময় একটি কাজ করতে গিয়ে অন্য কোনো লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মানুষ। তাই নিজেকে জিজ্ঞেস করুন- কী কাজ করেছে? কী কাজ করেনি?

৯। নিজের জীবন থেকে শিক্ষা নিন

আপনার জীবনে যা কিছু ঘটছে তা আপনার সিদ্ধান্তেরই ফসল। আর তাই আপনার জীবনের মূল শিক্ষার উৎসও আপনি। তাই আপনি কি  শিক্ষা নিবেন আর কি ঘটবে ভবিষ্যতে – এই সবকিছুর জন্য দায়িত্বটিও কিন্তু নিতে হবে আপনাকেই। তাই জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে শিক্ষা হিসেবে নিন। প্রতিবার ব্যর্থ হওয়ার পর নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন যে, আপনি কী শিখলেন?

১০। সঠিক পরিবেশ বেছে নিন

এটা সফল হওয়ার অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। আপনি যেমন ঠিক তেমন মানসিকতার মানুষগুলোকে আপনার পাশে বেছে নিন, যাদের ভাষা, চিন্তা, লক্ষ্য ইত্যাদি আপনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এমন মানুষ এবং পরিবেশ এড়িয়ে চলুন যেটা আপনার জীবনকে বিষাক্ত করে ফেলবে।

ক্রিসের মতে সাফল্য আর প্রাচুর্য্যের জন্য এই দশটি উপায় মেনে চলাটাই যথেষ্ট। আমি জানি ক্রিস সত্যি বলেছেন। কারণ, আমি নিজেও এই উপায়গুলো আমার জীবনে ব্যবহার করেছি আর কিছুদিন পর খুব ভালো ফলাফল পেয়েছি।

লিখেছেন লুইস হোইস।

www.success.com সাইটে মূলত প্রকাশিত।

আপনি উদ্যমী!
আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান?  

তাড়াতাড়ি সাবস্ক্রাইব করুন।

আমাদের সেরা কনটেন্ট আপনার ইমেইলে পৌছে যাবে প্রতি সপ্তাহে।  

Invalid email address
আপনি যেকোনো সময় আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।  

মন্তব্য করুন