সম্পর্কের মধ্যে উষ্ণতা বজায় রাখার ৬টি উপায়
দূরের সম্পর্কগুলো বেশী দূর এগোয় না,৭ বছরের জ্বালাতন কি সত্যি? বাচ্চারা সবসময় রোমাঞ্চ নষ্ট করে। আপনি একই সাথে ভালবাসা এবং সফল ক্যারিয়ার পাবেন না,আপনাকে বাচাই করতে হবে।
এগুলোর যেকোন একটি শোনার সম্ভাবনা রয়েছে আপনার,অথবা অনেকগুলোই। দূরের সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে প্রধান মিথ হলো, এক্ষেত্রে প্রচেষ্টা বা আবেগ কেবল সম্পর্কের শুরুর দিকে থাকে। কিন্তু অবধারিতভাবে সময়ের সাথে সাথে এই অনুরাগ বা জৌলশ ক্ষীণ হয়ে যায় এবং সম্ভবত অদৃশ্য হয়ে যায়।
পরিচিত মনে হচ্ছে?
সম্পর্কের প্রানবন্ততা কেন মলিন হয়ে পড়ে?
এর জন্য জুড়িরা অগনিত কারণ উল্লেখ করেন। আসলে একসাথে যথেষ্ট পরিমাণ সময় না কাটানোর জন্যই সেগুলো ঘটে থাকে। এটি দূরের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বা কাজের চাপ অথবা সন্তানদের চাহিদার প্রতি মনযোগী হতে গিয়ে হয়ে থাকে। অনেক সময়ই এমন হয় যে এই বিষয়গুলো অভ্যাসে পরিণত হয়ে পড়ে। ‘আগামীকাল’,‘পরের সপ্তাহে’ বা ‘যখন সব কিছু ঠিক হবে’-এই অজুহাতগুলো তৈরি হয়।
একত্রে কম সময় কাটানোর কারণে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা হারিয়ে যায় এবং সেই সাথে জুড়িরা একে অন্যের প্রতি আগ্রহও হারিয়ে ফেলে। আগ্রহ হারিয়ে ফেললে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ ঘাটতি হয়,নেতিবাচকতার একটি বৃত্ত তৈরি হয় যা পরবর্তী হতাশা এবং অধিক দূরত্বের কারণ হয়ে উঠে।
এরপরেও প্রানবন্ততাকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি সম্পর্কের স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য, পরস্পরের সাথে এক বা দুবার সময় কাটানোর চেয়েও বেশী কিছু করা প্রয়োজন।
সম্পর্কের প্রানবন্ততাকে বাঁচিয়ে রাখার ছয়টি উপায়-
১।তৈরী করা
আপনি কি চান শুধু তা খুঁজে বেড়ালেই চলবে না বরং আপনাকে সেটি তৈরী করতে হবে। একজন ভাল সঙ্গী হতে হলে আপনাকে জানতে হবে অন্যজন আপনার কাছ থেকে কি ধরনের ইমোশনাল সাপোর্ট চাচ্ছে, এবং কিছু চাওয়ার আগে সম্পর্ক আরো ভালো করার খাতিরে উদ্যোগ নিয়ে অন্যের জন্য কিছু করতে হবে। আপনাদের সম্পর্কের শুরুর দিকের কথা চিন্তা করুন। আপনি আপনার সঙ্গীকে খুশি করতে সব কিছু করতেই ইচ্ছুক ছিলেন। এখন আপনি কি করতে ইচ্ছুক?
২।আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলুন
একটি ভাল সম্পর্কের জন্য আপনার নেতিবাচক যোগাযোগের চেয়ে ৫ গুন বেশী ইতিবাচক যোগাযোগ প্রয়োজন, বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে। একে অপরের সাথে কথা বলুন, কিন্তু তার মানে এই নয় যে ঘুমিয়ে যাবার পূর্বে কিছুক্ষণ গালগল্প করা। এর মানে ভবিষ্যত নিয়ে পরিকল্পনা করা,আপনার সঙ্গীর ভালবাসার অর্থ বোঝা এবং তার মন বুঝতে পারা।
৩।ক্রমবিকাশ
আমরা সাধারনত অন্যের সেইসব বৈশিষ্টের প্রতি আকৃষ্ট হই যা আমাদের মধ্যে নেই। তারপর আমরা ক্ষুব্ধ বোধ করি তখনই যখন দেখি সঙ্গীর সেইসব গুনগুলো আর আগের মতো নেই,যার ফলে সম্পর্কে হতাশা নেমে আসে। সম্পর্কের বিকাশ তখনই হয় যখন আমরা নিজেদের জন্য যা সুবিধাজনক, তার বাইরে গিয়ে দুজন মিলে নতুন কিছু করি।
৪।সারপ্রাইজ পরিকল্পনা
পরিকল্পনা করে আপনার সঙ্গীকে মাঝে মাঝে সারপ্রাইজ দেয়া অদ্ভুত শোনালেও, তা আপনার সঙ্গীর জন্য বিরাট তফাৎ তৈরি করে। সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য একটি তারিখ ঠিক করুন। আপনার সঙ্গীর ঐ সময়টি খালি রাখুন, কিন্তু তাকে জানাবেন না কি হতে যাচ্ছে। তারপর আপনারা দুজন উপভোগ করবেন এমন কিছু পরিকল্পনা করুন। এটি একসাথে ডিনার,হাঁটতে যাওয়া,সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়াতে যাওয়া হতে পারে। আপনার সঙ্গী ভাববে আপনি তাকে সময় দেওয়ার ব্যাপারে খেয়ালী।
৫।পুরনো গল্পে বেঁচে থাকা বন্ধ করুন
এই মূহুর্তে যা ঘটছে তাই সত্য। তাই পুরনো গল্প নিয়ে পড়ে থাকবেন না। বরং ভাবুন কি তাকে ভালবাসা অনুভব করাতে পারে। সেগুলো করুন। জানা নেই? জিজ্ঞাসা করুন।
৬।দেওয়া
এটি বোঝায় যে আপনি আপনার সঙ্গীকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।মনে রাখবেন,আপনি যদি সম্পর্কের জন্য কোন অবদান না রাখেন, তবে কিছু পাবেনও না। সঙ্গীর কাছ থেকে যদি কিছু না পান তাহলে এটা খুবই স্বাভাবিক যে, আপনি নিজেকে অগুরুত্বপূর্ণ এবং জীবনকে প্রেমহীন অনুভব করবেন। বরং ভাবুন, আপনার সঙ্গীকে কি দিয়ে বোঝাতে পারবেন সে আপনার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
সারপ্রাইজ তৈরি করুন,বাধা নয়। আরো সহজভাবে বলতে গেলে তাই করুন যা আপনি আপনাদের সম্পর্কের শুরুতে করতেন এবং চালিয়ে যান।
লিখেছেন টিম রবিন্স।
www.tonyrobbins.com সাইটে পূর্বপ্রকাশিত।
মন্তব্য করুন