সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালোবাসার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ১০টি বিষয়

Share

আমার সম্পর্কে আপনাদের প্রথমেই যে জিনিসটি জানা দরকার তা হলো আমি একজন নিরাশ রোমান্টিক ব্যক্তি। আমি রাস্তায় হাত ধরে কোন যুগলকে যেতে দেখলে মুগ্ধ হই, রোমান্টিক কমেডি সিনেমা আমার খুব প্রিয় এবং আমার বাড়ির বুক শেলফে নিকোলাস স্পার্কের বই সারি বেঁধে আছে। তাই এখন আমি যে কথাটা বলতে যাচ্ছি সেটা আপনাদের একটু ধাক্কা দিতে পারে। আমার মনে হয় আজকালকার দিনের সম্পর্কগুলোয় “ভালোবাসা” শব্দটি খুব বেশি এবং ভুলভাবে ব্যবহৃত হয়।  

এখন এক মুহূর্তের জন্য আমার কথা মন দিয়ে শুনুন। “ভালোবাসি” বলাটা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আপনি আসলে কী বোঝাতে চান সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভালোবাসা ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যতটা নীচের তালিকার বিষয়গুলো। আমি কি খুব কঠিন হৃদয়ের? না। হয়তো একটু কটু স্বভাবের। কিন্তু তাতে মানুষ এখন যেভাবে “ভালোবাসা” শব্দটির ব্যবহার করে যেন এটি অভিধানের অন্য শব্দ যেমন, পিজ্জা, টরোন্টো এসবের মতই, এই বিষয়টি বদলে যায় না।

অনেক সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও আমাদের নজর এড়িয়ে যায় কারণ আমরা মনে করি ভালোবাসাই সম্পর্ক গড়ে ওঠার একমাত্র কারণ। কিন্তু আসলে তা ঠিক নয়। এখানে কিছু বিষয়ের কথা বলা হলো যেগুলো আমি মনে করি কোন সম্পর্কে ভালোবাসার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

১। বিশ্বাস

একটি সম্পর্কে বিশ্বাস অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি আপনার সঙ্গীকে বিশ্বাস করতে না পারেন তাহলে এটা মোটেই কোন সুস্থ, স্থায়ী সম্পর্ক নয় এবং এই সম্পর্ক নিয়ে আপনি অনিশ্চয়তায় ভুগবেন। সময়ের সাথে বিশ্বাস দৃঢ় হয় এবং সম্পর্কের শুরুতে যদি বিশ্বাসের ঘাটতি থাকে তাহলে আপনাকে আরো সময় দিতে হবে।

২। সততা

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যবাদী এবং সৎ হওয়া খুব জরুরী। আপনি আপনার সঙ্গীকে যতই ভালোবাসুন না কেন মিথ্যা আশা এবং বানোয়াট কথার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ক একটা পর্যায়ে ভেঙে যায়। সততা দুজনের মধ্যে একটি সুন্দর যোগাযোগ তৈরি করে যা সম্পর্কের অনেক দিককে শক্তিশালী করতে পারে।

৩। সম্মান

শুনতে খুব সাধারণ শোনালেও এটা ঠিক যে ভালোবাসা কখনো কখনো বাধ্যতার পর্যায়ে চলে যেতে পারে, বিশেষ করে যখন আত্মমর্যাদার কথা আসে। আপনি প্রকৃত অর্থে যা বা যা আপনার প্রাপ্য তা কোন ভালোবাসাই বদলে দিতে পারে না। ভালোবাসা কখনোই অসম্মান বা নির্যাতনের বৈধতা দেয় না। সম্পর্কে আবদ্ধ সঙ্গীরা এবং যারা একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় তারা অবশ্যই একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।

৪। যোগাযোগ

যোগাযোগ যেকোন সম্পর্কের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়। আপনার অনুভূতি, চাহিদা এবং প্রত্যাশাগুলো প্রকাশ করার জন্য যোগাযোগ করা প্রয়োজন। ঝগড়া-বিবাদ মিটিয়ে ফেলার জন্য এবং অন্তরঙ্গতা বাড়ানোর জন্যও যোগাযোগ করতে হবে। ভালো যোগাযোগ ছাড়া কীভাবে একটি সম্পর্ক সহজ হবে এবং বাকি যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো মজবুত হবে?

৫। বিশ্বস্ততা

এই বিষয়টি বিশ্বাসের সাথে জড়িত। যদি আপনি আপনার সঙ্গী এবং সম্পর্কের প্রতি নিষ্ঠাবান থাকার মত বিশ্বস্তই না হন তাহলে আপনি সম্পর্কে কেন জড়ালেন? সম্পর্কের ক্ষেত্রে আনুগত্য এই তালিকার বাকি বিষয়গুলোর গাঁথুনি হিসেবে কাজ করে। আপনার আসলে সম্পর্কে জড়িয়ে থাকার ইচ্ছে থাকতে হবে এবং এটা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।

৬। সুখ

সত্যি কথা বলতে, কেউই সবসময় সুখী হতে পারে না কিন্তু এটা সবাই চায় এবং নির্বিশেষে পাওয়ার অধিকার রাখে। সম্পর্কগুলো সবসময় রোদ ঝলমলে এবং রংধনু  আঁকা নয় কিন্তু মন খারাপের সময়ের চেয়ে সুখের সময় বেশি হওয়া উচিত। একটি সম্পর্কে সুখী হওয়া আসলেই খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং যদি আপনি সুখী না হন তাহলে আপনার এই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে হবে।  

৭। বোঝাপড়া

একটা সম্পর্কের পুরোটাই হলো দেওয়া এবং নেওয়া। যদি একজন শুধু নিতেই থাকে, কোন কিছু না দেয় তাহলে কিছু একটার পরিবর্তন আবশ্যক। একটা সুস্থ সম্পর্কে দুজনের মাঝে সুখ প্রতিষ্ঠার জন্য আপোস প্রয়োজন।

৮। নিরাপত্তা

যদি আপনি আপনার সঙ্গীর সাথে নিরাপদ বোধ না করেন তাহলে আপনি সঠিক সম্পর্কে নেই। আপনার নিজের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই। ভালোবাসা এটা কঠিন করে তোলে, কিন্তু আপনি যদি কোনভাবে নির্যাতনের শিকার হন তাহলে সেই সম্পর্কের কোন অর্থই নেই। যদি আপনি নিরাপদই না হন, তাহলে সুখী হবেন কীভাবে?  

৯। স্বাধীনতা

কিছু যুগল একসাথে খায়, ঘুমায়, শ্বাস নেয় এবং একসাথেই বাঁচে- এবং এটা ঠিকই আছে। তবুও মাঝেমাঝেই আপনার জীবনের সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাছ থেকে নিজের জন্য কিছু আলাদা সময় এবং জায়গা রাখা জরুরী। যদি আপনাদের পছন্দের কাজগুলো একই হয় এবং আসলেই আপনারা পরস্পরের সাথে যতটা সম্ভব সময় কাটাতে পছন্দ করেন তবুও কারো জন্যই আপনার নিজস্বতাকে দূরে ঠেলে রাখা উচিত নয়।

১০। অংশীদারিত্ব

নিজের জন্য একান্ত ব্যক্তিগত স্থান থাকার পাশাপাশি যুগল হিসেবেও আপনাদের শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। আপনি মা, সেবিকা বা চাকর নন (যদিও মাঝে মাঝে এই ভূমিকাগুলো পালন করতে হয়)। সম্পর্কে আপনারা দুজন সমান অংশীদারী এবং এরকমটা যদি না হয় তাহলে এটা আসলেই ভাবার বিষয়। আপনাদের দুজন স্বাতন্ত্র্য ব্যক্তিকে একটি সমান খেলার ক্ষেত্র বজায় রাখার জন্য একটি দল হিসেবে একত্র হতে হবে।

-ব্রুকলিন নিউস্ট্যেটার

www.narcity.com এ পূর্ব প্রকাশিত আর্টিকেলের ছায়া অবলম্বনে লেখা।  

আপনি উদ্যমী!
আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান?  

তাড়াতাড়ি সাবস্ক্রাইব করুন।

আমাদের সেরা কনটেন্ট আপনার ইমেইলে পৌছে যাবে প্রতি সপ্তাহে।  

Invalid email address
আপনি যেকোনো সময় আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।  

মন্তব্য করুন