সত্যিকারের সুখী হতে চাইলে, জীবনের যে ৯টি মূহুর্তকে কদর করা উচিত
সাফল্য এবং সুখ অর্জন করা সহজ কোন কাজ নয়। এটি অর্জন করতে অনেক সময়, কঠোর পরিশ্রম এবং ভাগ্য লাগে।
সেইজন্য এটি অর্জনের পাশাপাশি, আমাদের উচিত জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোর কদর করা – সেই সংক্ষিপ্ত সময়গুলো যেখানে সবকিছুই সুন্দর, ঠিক আপনার মন মত।
এখানে প্রাত্যহিক জীবনের ৯টি মূহুর্ত যা কিনা মূল্যবান অভিজ্ঞতা হিসাবে কাজে লাগবে, যদি আপনি আরো সুখী হতে চান বা আরো সফল হতে চান জীবনে।
১। হাসি–ঠাট্টায়ে ভরা মুহুর্তগুলো
দেহতত্ব এবং বিজ্ঞানে এর প্রমাণ মিলেছে, যে হাসি-ঠাট্টা আমাদেরকে ভাল মুডে থাকতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন কিছু সময় ব্যয় করুণ হাসি-ঠাট্টায় এবং আপনি আবিষ্কার করবেন যে এটি সংক্রামক এবং উৎসাহজনক। মজার মজার মানুষদের সাথে মিশুন, নিজেকে নিয়ে মজা করুন এবং যতো পারুন হাসুন।
২। সেলিব্রেট করার মতো মুহুর্তগুলো
ছোট ছোট সাফল্যগুলোকে আমরা সেলিব্রেট করি না, এমনকি বড় সাফল্য সেলিব্রেট করার সময়ও আমাদের নেই।
আমার কোম্পানি ‘লাইকেবল লোকাল’ এ আমরা প্রতিদিন ৫ টায় “মোমেন্ট অফ রক” নামে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারন করেছি, আমাদের প্রত্যেক দিনের সফলতা উদযাপন করতে। সবাই সে সময় এমনভাবে সেলিব্রেট করে যেন তাদের প্রিয় স্পোর্টস দল কোন চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে।
ভাবুন, আপনি কিভাবে প্রতিদিন একটু সময় বের করতে পারেন আপনার জীবনে ভাল মুহুর্তগুলো সেলিব্রেট করতে?
৩। গভীরভাবে চিন্তা করার মুহুর্তগুলো
আমরা সবাই খুব ব্যস্ত জীবন যাপন করি। এটি খুবই জরুরী প্রতিটি দিন অন্তত একটি মুহূর্ত বের করা যখন আমরা শুধু নিজের মতো করে চিন্তা করতে পারব।
আপনার ফোনটি দূরে রাখুন, নিজে নিজে কোথাও চলে যান এবং গভীরভাবে চিন্তা করুন (এটি খুব লম্বা সময় ধরে হতে হবে এমন নয়!)। সেই দিনটিকে ভাবুন, যেদিনগুলো আসছে সেগুলো নিয়ে ভাবুন, যে সিদ্ধান্তগুলি নিতে চলেছেন তা নিয়ে ভাবুন এবং আপনি অতীত থেকে যা শিখেছেন সে সম্পর্কে ও ভাবুন।
৪। স্থিরতার মুহুর্তগুলো
নিজের প্রতিচ্ছবি পর্যবেক্ষন করা এবং প্রকৃত স্থিরতার কিছু মূহুর্ত আছে – যেখানে আপনি সবকিছু বন্ধ করে রাখার ক্ষমতা রাখেন, এমন কি আপনার চিন্তা-ভাবনাগুলোও এবং ধ্যান মগ্ন হতে পারেন।
আপনার জীবন যতো ব্যস্ততাপূর্ণ, স্থিরতায় কাটানোর মুহূর্তগুলো চর্চা করা আরো বেশি জরুরি। যোগব্যায়াম এবং ধ্যান সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় এটি করার, কয়েক মিনিটের জন্য হলেও এটি করুন (বিজ্ঞান বলে আপনি মাত্র ১৫ মিনিটে এর সুফল পাবেন)।
৫। গৌরবের মুহুর্তগুলো
অনেক মানুষ “গর্ব” শব্দটি নেতিবাচকতার সাথে দেখেন।
কিন্তু আপনি গর্ব করতে পারেন এমন অনেক কিছু আছে। প্রতিদিন কমপক্ষে একটি মুহুর্ত তুলে রাখুন, যেখানে আপনি সবকিছু বন্ধ করে নিজের কাজগুলোর প্রশংসা করতে পারেন এবং আপনি যে ভাল একজন মানুষ তার তারিফ করতে পারেন। ছোট ছোট জিনিসগুলো যা আপনি করেছেন জীবন চলার পথে তা নিয়ে গর্ব করুন।
৬। নম্রতার মুহুর্তগুলো
আমাদের অর্জন নিয়ে গর্ব করা ঠিক আছে, কিন্তু নম্রতা কিছু মুহূর্তের ও দরকার আছে, যেখানে আপনি আপনার চারপাশের এই বিশাল মহাবিশ্বে আপনার ক্ষুদ্র ভূমিকার প্রশংসা করেন। আমরা যখন আমাদের চারপাশের এই চমৎকার জগতের প্রশংসা করতে পারি, তখন আমাদের যা আছে তাতে খুশি হওয়া খুব সহজ হয়ে পরে।
৭। সম্পৃক্তিতার মুহুর্তগুলো
মানুষ আসলে সামাজিক প্রাণী।
আপনার চারপাশের লোকেদের সাথে মেশার জন্য দিনে অন্তত একটি মুহুর্ত ব্যয় করুন-আপনার প্রিয় মানুষটি বা বন্ধু অথবা পরিবারের সাথে। করো হাত ধরুন বা কাউকে আলিঙ্গন করুন অথবা আদর করুন। আপনার ভাল থাকা শুধু আপনার জন্য নয়, এটি অন্যদের জন্যও।
৮। আনন্দের মুহুর্তগুলো
হাসি-ঠাট্টা করা ভাল, কিন্তু প্রাণবন্ত আনন্দের মুহুর্তগুলো আরো প্রগাঢ়। কিছু সময় নিন আপনার বাচ্চাদের সাথে বা পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে, আত্ম সংযোগের মুহুর্তগুলো যা কিনা আপনি পেতে পারেন তাদের সাথে খেলাধুলা করে অথবা একসাথে নেচে- গেয়ে।
৯। কৃতজ্ঞতার মুহুর্তগুলো
পরিশেষে, প্রতিটি দিন একটু সময় নিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে- আপনার জীবনে যে মানুষগুলো আছে তাদের জন্য, আপনি যে অভিজ্ঞতাগুলি অর্জন করেছেন এবং করতে যাচ্ছেন এবং আপনার চারপাশের জগৎটির জন্য। আপনি শারীরিকভাবে রাগ বা বিরক্তি এবং কৃতজ্ঞতা একই সময়ে অনুভব করতে পারেন না, তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য কিছু মুহূর্ত ব্যয় করুন, যা কিনা আপনাকে আরো সুখী করবে।
আবার, এইগুলো কেবল কিছু মুহুর্ত – যার মানে এটি পিছনে খুব বেশি সময় ব্যয় করা লাগে না এবং আবার এমন ও হতে পারে যে এগুলো আপনি হয়তো করছেন নিয়মিত। কিন্তু এটি যে কত শক্তিশালী হতে পারে, তা যদি আপনার জানা থাকে তবে আপনি সত্যি সত্যি সুখের পথে নিজেকে পরিচালিত করতে পারবেন।
themuse.com সাইটে প্রকাশিত আর্টিকেলের ছায়া অবলম্বনে লেখা।
মন্তব্য করুন