জীবনকে উন্নত করার ১৩টি উপায়

Share

আমরা চাইলেই যে কোন অবস্থা থেকে আমাদের লক্ষ্য অবস্থানে যেতে পারি। এর জন্য প্রয়োজন শুধু চেষ্টা করা। – জিম রন

নাটকীয়ভাবে আমরা আমাদের কর্মফল পরিবর্তন করতে পারি যেটা অনেকাংশে নির্ভর করে ইচ্ছাশক্তির উপরে।

১৯৬০ সালের দিকেও মহাশূন্যে ভ্রমণ প্রযুক্তিগতভাবে একটি অসম্ভব ব্যাপার ছিল। এর প্রায় ১০ বছরের মধ্যেই মানুষ সর্বপ্রথম চাঁদে পদার্পণ করে। “এই দশকের শেষে আমেরিকা চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছে” এই কথাটি সত্যিতে পরিণত করার জন্য যা করা দরকার তাই করার জন্য বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের দিকে এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হয়েছিল। তখনই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তর করার এক বিস্ময়কর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই চ্যালেঞ্জ কল্পনার উর্বর মাটিতে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য অর্জনের বীজ বপনের মাধ্যমে একটি জাতির উৎসাহ জাগিয়ে তুলেছিল।

ওই বিরাট চ্যালেঞ্জের কারণেই অসম্ভব ব্যাপারটি বাস্তবে রূপ লাভ করতে পেরেছে।

এই একই নীতি জীবনের সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য ।

একজন দরিদ্র ব্যক্তি কি ধনী হয়ে উঠতে পারে? অবশ্যই পারে। স্বপ্ন, পরিকল্পনা, চেষ্টা এবং অধ্যবসায়ের অনবদ্য সম্মিলন সবসময় জাদুর মত কাজ করে। সফলতার সূত্র কাজ করবে কিনা এটা কোন প্রশ্ন নয় বরং প্রশ্ন হলো সূত্রটি দিয়ে সফলতা অর্জন করে নিতে পারবে কিনা। এটাই হলো অজানা চলক। এই চ্যালেঞ্জেরই মোকাবেলা করতে হয়।

আমরা চাইলেই যে কোন অবস্থান থেকে অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে যেতে পারি। কোন স্বপ্নই পূরণ করা অসম্ভব নয়। শুধু এটা বিশ্বাস করার সাহস থাকতে হবে।

কীভাবে ১৩টি উপায়ে জীবনকে উন্নত করবেন তা এখানে দেওয়া হলো-

 ১। আপনার ভীতির মুখোমুখি হোন

এভাবেই আপনি ভীতি কাটিয়ে উঠবেন। ভীতির কারণগুলো এড়িয়ে না গিয়ে মুখোমুখি হোন। নিজেকে বলুন, এই যে আমার ভীতির কারণ। আমি এগুলো কাটিয়ে উঠতে কী করতে পারি। আজকেই আপনার ভীতির মুখোমুখি হোন।

২। দিক পরিবর্তনের জন্য নিজের ইচ্ছাশক্তির চর্চা করুন

যদি আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল না পান তাহলে গত ছয় বছর ধরে যা করে আসছেন তাই করতে থাকার দরকার নেই। একটা নতুন লক্ষ্য নির্ধারন করুন এবং সেই পথে চলুন। নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যাত্রা শুরু করুন। আপনার আগের বছরের পুনরাবৃত্তির দরকার নেই। ভুলগুলো মুছে ফেলুন। সামনে বছর এগুলো থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগান এবং পার্থক্যটা নিজেই দেখুন।

৩। নিজের ভুলগুলো স্বীকার করুন

কখনো কখনো অন্যের কাছে এগুলো স্বীকার করতে হবে। ইংরেজিতে একটা চমৎকার কথা আছে, “আমি দুঃখিত”। এই শব্দগুলো একটা সম্পর্ক পুরোপুরি নতুনভাবে শুরু করতে পারে। এগুলো দুজন মানুষকে সম্পূর্ণ নতুন পথে যাত্রা শুরু করাতে পারে। নিজের কাছেও ভুলগুলো স্বীকার করুন। আপনাকে পাড়ার প্রতিটি মানুষের কাছে এগুলো বলে বেড়ানোর দরকার নেই। স্থির হয়ে বসুন এবং নিজের সাথে কথা বলুন। বলুন যে নিজেকে নিয়ে আকাশ কুসুম ভেবে লাভ নেই। আমি বাস্তবে এই অবস্থায় আছি। আমার পকেটে কানাকড়ি আছে এবং ব্যাংকে কোন সঞ্চয় নেই। এতে আপনার কোন ক্ষতি হবে না। এক মেয়ে আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমি এটাই বলেছিলাম। আমি নিজের সাথে আলাপ করেছি এবং বলেছি আমি এর পুনরাবৃত্তি কখনোই চাই না।

৪। আপনার লক্ষ্য সংশোধন করুন

কাজ শুরু করে দিন। বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। মহৎ উদ্দেশ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। যা আগে কখনো ভাবতেও পারেননি এমন কিছু করার চেষ্টা করুন।

৫। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন

আপনাকে সম্ভাবনার উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে আজকের চেয়ে আগামীকাল আরো ভালো হবে। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। এমন কিছু নেই যা আপনি শিখতে পারবেন না, এমন কোন বিষয় নেই যা আপনি চেষ্টা করতে পারবেন না। এমন কোন পাঠ নেই যা আপনি পড়াতে পারবেন না বা এমন কোন বই নেই যা আপনি পড়তে পারবেন না।

৬। জ্ঞানের সন্ধান করুন

এমন জ্ঞানের অনুসন্ধান করুন যা থেকে প্রশ্নের উত্তর পাবেন। আজ এবং আগামীর প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করতে পারবেন এমন জ্ঞান অনুসন্ধান করুন। এটা সহজ ছিল এই আশা করবেন না বরং আশা করুন যে আপনি আরো ভালো হতে পারতেন।

৭। সময় সঞ্চয় করুন

মাঝে মাঝে আমরা প্রবঞ্চনার শিকার হই। মোটিভেশনাল স্পীকার বিল বেইলি বলেন যে বেশিরভাগ মানুষ বলে, “আমি আরো বাড়তি ২০ বছর পেয়েছি”। কিন্তু বিল বলেন আপনি আরো ২০ বার বাড়তি সুযোগ পেয়েছেন। আপনি যদি বছরে একবার মাছ ধরতে যান তারমানে আপনি আরো ২০ বার বেশি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, ২০ বছর মাছ ধরার সুযোগ নয়। এভাবেই আপনি প্রবঞ্চিত হন।

৮। মুনাফা বিনিয়োগ করুন

আমার গুরু আর্ল শোয়াফ আমাকে যে দর্শন গুলো দিয়েছিলেন তার মধ্যে একটি হলো, “মজুরীর চেয়ে মুনাফা শ্রেয়”। মজুরী আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে, মুনাফা আপনার সৌভাগ্য বয়ে আনবে। আমরা কি একই সাথে বাঁচতে এবং মুনাফা লাভ করা শুরু করতে পারি না? উত্তর হলো হ্যাঁ, পারি।

৯। প্রাচুর্যতায় বাঁচুন

আপনি একাধিক সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন। যা করছেন তাতে আরো বেশি নিজেকে বিনিয়োগ করুন। আরেকটু বেশি দৃঢ় হোন, আরেকটু বেশি বুদ্ধিদীপ্ত। আপনার প্রাণবন্ত অবদান বৃদ্ধি করুন। প্রতিটি কাজে নিজের সবটুকু দিন এবং আরো প্রাণবন্ততা, আরো শক্তি, আরো উৎসাহ, আরো মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

১০। নিজের সঠিক স্থান খুঁজে বের করুন

আপনি যদি কোথাও চাকরী করেন তাহলে খুঁজে বের করুন যে কোথায় আপনি সবচেয়ে ভালো সেবা দিতে পারবেন এবং তারা আপনাকে আরো ভালো পর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করবে। আপনার কাজ মন দিয়ে করে যান এবং নিজের সর্বোচ্চ দিন। এটাই আপনার সবচেয়ে ভালো উপায়।

১১। নিজের সততা বজায় রাখুন

সততা আর বিশ্বস্ততা একই। আপনি এটা অন্য কারো কাছে প্রত্যাশা করতে পারেন না, শুধুমাত্র নিজের কাছেই প্রত্যাশা করতে পারেন। নিজেকে সবচেয়ে বিশ্বস্ত হিসেবে প্রমাণ করুন এবং এর ফলে আপনি বিশ্বস্ত অনুসারী পাবেন। নিজেকে সততার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে প্রমাণ করুন এবং এতে করে আপনি আপনার পাশে সবচেয়ে সৎ মানুষদের একজনকে পাবেন। এভাবেই পথ চলুন।

১২। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করুন  

সুশৃঙ্খল জীবন বাস্তবতা তৈরি করে। এর চেয়ে ভালো কোন উপদেশ আর নেই। শৃঙ্খলতা শহর গড়ে তোলে। নিয়মনীতি মেনে করা কর্মকাণ্ড প্রাচুর্য, অনন্যতা এবং উৎপাদনশীলতা তৈরি করে।

১৩। সত্যের জন্য লড়াই করুন

“আমি আমার সন্তানদের জন্য লড়াই করেছি। যা সঠিক তার জন্য লড়াই করেছি। সুস্বাস্থ্যের জন্য লড়েছি, আমার প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করার জন্য লড়েছি, ভালো ক্যারিয়ারের জন্য লড়েছি যা আমার পরিবারকে খুশি করবে। আমি একটা দারুণ লড়াই লড়েছি”, এটা বলতে পারা একটি অসাধারণ ব্যাপার। প্রতিপক্ষরা লড়ছে এবং আপনি তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন। যদি মূল্যবান কিছু পেতে চান তাহলে আপনাকে তার জন্য লড়তে হবে।

www.success.com সাইটে প্রকাশিত আর্টিকেলের ছায়া অবলম্বনে লেখা।  

আপনি উদ্যমী!
আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান?  

তাড়াতাড়ি সাবস্ক্রাইব করুন।

আমাদের সেরা কনটেন্ট আপনার ইমেইলে পৌছে যাবে প্রতি সপ্তাহে।  

Invalid email address
আপনি যেকোনো সময় আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।  

মন্তব্য করুন