কার্যকর মার্কেটিং স্ট্রাটেজি গড়ার উপায়

Share

আজকে আমি আপনার সাথে কথা বলব কার্যকর মার্কেটিং স্ট্রাটেজি গড়ার উপায় নিয়ে। আমাদের দেশে অনেকেই তার প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যকর মার্কেটিং স্ট্রাটেজি তৈরী নিয়ে কনফিউশনের মধ্যে থাকেন।একটি কার্যকরী মার্কেটিং স্ট্রাটেজির চারটি মূল নীতি আছে এবং এগুলোর উপর একটি প্রতিষ্ঠান লাভজনক হচ্ছে কিনা তা অনেকাংশে নির্ভর করে।নীতিগুলো হলো

১) Specialization বা বিশেষীকরণ

আমরা অনেক সময়ই মনে করি একই সাথে অনেক ধরনের কাস্টমারকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা সেবা দিয়ে এক সাথে টার্গেট করলে ব্যবসা তাড়াতাড়ি লাভজনক করা যাবে।কিন্তু আসলে ব্যাপারটা ঠিক তার উল্টা।আপনি যদি একটা মার্কেটের সকল কাস্টমাররের কাছে আপনার পণ্য বা সেবা নিয়ে পৌছাতে চান তাহলে কাউকেই আপনি ঠিকভাবে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না। আপনাকে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনার পণ্য বা সেবা নিয়ে মার্কেটের ঠিক কোন জায়গায় আপনি বিশেষজ্ঞ হবে।|উদহারণসরূপ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকেরডিল সারা বাংলাদেশ জুড়ে সেইসব কাস্টমারদেরকে টার্গেট করছে যারা কম টাকায় অনলাইন একটি মার্কেটপ্লেস থেকে পণ্য কিনতে চায় যা কিনা তারা যে জায়গায় থাকে সেখানে সহজলভ্য নয়।       

২) Differentiation বা পৃথকীকরণ

পৃথকীকরণ হলো কার্যকর মার্কেটিং স্ট্রাটেজি গড়ার পথে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।বলুনতো আপনার পণ্য বা সেবার মুল্য কে ঠিক করে? আপনার নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে আপনি বা আপনার প্রতিষ্ঠান করে! ভুল, মুল্য ঠিক করে আপনার প্রতিদ্বন্দী পণ্য বা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।তাই আপনার সম্পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে আপনার প্রতিদ্বন্দীদের সম্পর্কে।কেন আপনার আদর্শ কাস্টমার আপনার কাছ থেকে না কিনে আপনার প্রতিদ্বন্দী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কিনছে? তারা আপনার থেকে  আপনার প্রতিদ্বন্দীদের কাছ থেকে কি উচ্চ মান পাচ্ছে এবং আপনি তাদের এই উপলব্ধি পরিবর্তনের জন্য কি করতে পারেন?

আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাযিক সাফল্যের জন্য আপনাকে আপনার প্রতিদ্বন্দীদের দেয়া পণ্য বা সেবার মান থেকে ভালো এবং সম্পূর্ণ পৃথক সমাধান দিতে হবে কাস্টমারদের প্রয়োজন বা সমস্যার।এবং তা নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে আপনার টার্গেট কাস্টমারদের সম্পর্কে সব কিছু জানতে হবে – তারা কে , তারা কি করে, তাদেরকে আপনার কাস্টমার বানাতে হলে কি করা লাগবে ইত্যাদি।   

উদাহরণসরূপ মার্কেটে যখন ব্ল্যাকবেরি মোবাইল সেট বের হলো তখন স্টিভ জবস তার প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ারদেরকে ডেকে নিয়ে বললেন – আমি এমন একটি এপল ব্রান্ডের মোবাইল ফোন বানাতে চাই যা কিনা একটি বাটন দিয়ে চালু বা বন্ধ হবে,  এছাড়াও সব ধরনের কাজ করা যাবে এবং খুব সহজে ব্যবহারযোগ্য হবে।ইঞ্জিনিয়াররা বলল এই ধরনের কোন ফোন তৈরী করা সম্ভব না, কিন্ত স্টিভ জবস লেগে থাকলেন এবং যার ফলে সর্বপ্রথম এক বাটনের টাচস্ক্রিনযুক্ত এপল মোবাইল ফোন মার্কেটে আসলো| বাকি ইতিহাস আমাদের প্রায় সবারই জানা। 

৩) Segmentation বা সেগমেন্টেশন

আপনি যদি একের অধিক পণ্য বা সেবা বাজারে বিক্রি করতে চান তাহলে সম্ভাব্য কাস্টমারদেরকে আলাদা মার্কেট সেগমেন্টে ভাগ করতে হবে।

আপনাকে প্রত্যেকটি সেগমেন্টের সম্ভাব্য কাস্টমারদের স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য বের করতে হবে কার্যকর উপায়ে বিজ্ঞাপন তাদের কাছে পৌছানো এবং বিক্রির জন্য।

আপনাকে বের করতে হবে প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার কোন বৈশিষ্ট্যটি টার্গেট কাস্টমাররা পছন্দ করবে এবং যার জন্য কিনতে চাবে। রহিমআফরোজ যখন গ্লোব্যাট মেইনটেইনেন্স ফ্রি ব্যাটারী বের করে তখন তাদের টার্গেট কাস্টমার সেগমেন্ট ছিল মধ্যবিত্ত ও উপরের শ্রেনীর গাড়ির মালিক এবং অফিস যারা ব্যাটারীতে নিয়মিত পানি দেয়ার ঝামেলায় যেতে চায় না এবং দীর্ঘস্থায়ী, উচ্চমানসম্পন্ন পণ্য চায়।

৪) Concentration বা একাগ্রতা

আপনি যখন বিশেষীকরণ, পৃথকীকরণ এবং সেগমেন্টেশনের মূল নীতি প্রয়োগ করে ফেলবেন আপনার পণ্যগুলো বা সেবাগুলোতে, এবং আপনার কাস্টমারদেরকে এবং মার্কেটগুলোতে, এরপর আপনাকে আপনার সীমাবদ্ধ সম্পদ একত্রিত করতে হবে।

আপনার জানা লাগবে

  • আপনার আদর্শ কাস্টমারদের কাছে পৌছানোর জন্য সম্ভাব্য সেরা উপায়গুলো কি কি?
  • সম্ভাব্য সেরা মাধ্যম কি হতে পারে?
  • কাস্টমারদের প্রধান চাহিদাগুলো কি কি?    

আপনি আপনার সময়, কর্মশক্তি, এবং টাকা ফোকাস করবেন সেইসব কাস্টমারের প্রতি যাদেরকে আপনি আপনার কাছ থেকে খুব তাড়াতাড়ি কিনবে বলে মনে করছেন এবং আপনি যখন তা করতে সফল হবেন আপনার প্রতিটি কাস্টমার অর্জনের খরচ পাচ থেকে দশ গুন কমে যাবে।

আপনি উদ্যমী!
আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান?  

তাড়াতাড়ি সাবস্ক্রাইব করুন।

আমাদের সেরা কনটেন্ট আপনার ইমেইলে পৌছে যাবে প্রতি সপ্তাহে।  

Invalid email address
আপনি যেকোনো সময় আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।  

মন্তব্য করুন