একজন আধুনিক বিপণনকারীর ১০টি দক্ষতা

Share

 

একজন কার্যকর বিপণনকারীর দরকারি দক্ষতা ও বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যক্ত করেছেন শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড ও এজেন্সির বিশেষজ্ঞরা।

পেশাদারিত্ব: বাজার বোঝা

“বর্তমান সময়ে একজন আধুনিক বিপণনকারীকে যে কয়টি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তার মাঝে সবচেয়ে প্রতিকূল হচ্ছে- ডিজিটাল ব্যবস্থা। ক্রেতাদের নানা রকমের আচরণ ও বহমুখী চিন্তার এই নতুন সময়টাকে বোঝাটা বেশ দুরূহ বটে।

কিন্তু আমাদের বাজার ব্যবস্থার মূলনীতিগুলো ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। বাজারকে বুঝতে হবে যথাযথ অবস্থা বিশ্লেষণ ও প্রতিযোগিতামূলক চিত্র ম্যাপিং-এর মাধ্যমে। জানতে হবে কিভাবে ভোক্তাদের চাহিদা বুঝে একটা ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে হয় কিংবা যেটা আপনাকে বাজারে নিজের একটা অবস্থান দেয়। বা জানতে হবে কিভাবে যুক্তি ও সৃজনশীলতা মিলিয়ে একটা কার্যকর প্রস্তাবনা উপস্থাপন করতে হয়। অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ- যেভাবেই রপ্ত করেন না কেন, এই দক্ষতাগুলিই আপনার মূল শক্তি।”

ব্যক্তিগত: বহুমুখিতা

“উদ্যম, উদ্ভাবনী দক্ষতা, সহমর্মিতা-এরকম আরো অনেক বৈশিষ্ট্য আছে যা একজন দক্ষ বিপণনকারী তৈরি করতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ের অনিশ্চিত ও দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে সবচেয়ে দরকারি বিষয় হচ্ছে-বহুমুখিতা।

ভোক্তার আচরণগত পরিবর্তনের সাথে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে- ডিসকাউন্ট দেয়া সুপার মার্কেট, কিংবা অনলাইন শপিং এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্রমাগত বৃদ্ধি – ব্র্যান্ডগুলোকে নিজেদের অবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।”
ডম ডোয়াইট, মার্কেটিং ডিরেক্টর, ইয়র্কসায়ার টি (টেইলর্স অফ হ্যারোগেইট)

পেশাদারিত্ব: আত্মপ্রেরণা

“যে পেশাদার গুণটিকে আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই তা হচ্ছে আত্মপ্রেরণা। যার মাঝে এই বৈশিষ্ট্যটি আছে, সে কী করতে হবে তা বলে দেয়ার জন্য অপেক্ষা করে না। বরং নিজের অভিজ্ঞতা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে প্রজেক্টকে আরো এগিয়ে নিয়ে যায়।”

ব্যক্তিগত: বিশ্বাস অর্জন

“যখন আপনি কারও মতামতকে গুরুত্ব দেবেন, আপনাদের পেশাদার সম্পর্ক এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে ও আপনি সহজেই কাজটা করতে পারবেন। বিশ্বাস গড়ে তোলা ও নতুন কোন ধারণায় প্রবেশের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন এটার পেছনে শক্তিশালী অন্তর্দৃষ্টি, প্রয়োজনীয় তথ্য ও এর সাফল্য সম্পর্কে একটা নিশ্চিত রূপরেখা আছে। এমনকি প্রকল্পটি যদি ব্যর্থও হয়, এই বিশ্বাস যেন থাকে যে – আইডিয়াটা ভাল ছিল এবং এখান থেকে ভবিষ্যতের জন্য বেশ কিছু শিক্ষনীয় ব্যাপার পাওয়া গেছে।”

মিচেল ব্রায়ান-লো, ডিরেক্টর অফ কাস্টমার মার্কেটিং এন্ড ইভেন্টস, ইএমইএ এট গুগল

পেশাদারিত্ব: স্বকীয় ও দ্রুত চিন্তাশীল

“গাজর দেখলে আপনি কি সালাদের কথা ভাবেন নাকি খরগোশের কথা? এখনকার দিনে আপনাকে খরগোশের কথা ভাবতে হবে। আমি এমন সৃজনশীল মানুষদের নিয়োগ করতে চাই যারা ভিন্নভাবে চিন্তা করতে পারে। যেহেতু তারা কোন কাঠামোতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না, তাই তাদের পরিচালনা করাটা খুব একটা সহজ কাজ নয়। কিন্তু আপনি যদি যথেষ্ট দ্রুতগামী কিংবা বিভিন্ন রকম ভোক্তার চোখ দিয়ে পৃথিবীতে দেখতে না পারেন, তাহলে পিছনে পড়ে যাবেন।”

ব্যক্তিগত: আশাবাদী

“এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি একজন নিরাশাবাদী মানুষ হন, তবে এখানেই থামুন। মানুষের অসম্ভব ভাবার কারণে অনেক বড় বড় চিন্তাও ব্যর্থ হয়ে গেছে। সবই সম্ভব।”

পেশাদারিত্ব: গল্প বলা

“মার্কেটিং সবসময়ই গল্প বলার ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত এবং বর্তমানের দ্রুত ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির এই যুগে ভোক্তাদের সাথে ব্র্যান্ডের সংযুক্ত হওয়ার ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেশি। তাই একজন আধুনিক বিপণন কর্মীকে অবশ্যই সব ডিভাইস ও প্লাটফর্মের মাধ্যমে তার গ্রাহকদের একটা সমন্বিত সেবা দেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। হতে পারে সেটা ই-কমার্স বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম)।”

ব্যক্তিগত: অকপটতা

“একজন আধুনিক বিপণনকারীর অন্যতম সেরা গুন হচ্ছে উদার ও সৎ থাকা। অকপটতা শ্রদ্ধার জন্ম দেয়, যা যেকোনো সম্পর্কের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সব কোম্পানিরই নিজস্ব উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি নিজের কাজের প্রতি সৎ ও উদার থাকেন, তাহলে প্রতিদিনকার শত বিশৃঙ্খলা সত্বেও ভোক্তার সাথে আপনার সম্পর্ক অটুট থাকবে। এবং এটাই আপনাদের সম্পর্ককে সমৃদ্ধ করবে।”

লি উডার্ড, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, হিউজ

পেশাদারিত্ব: সমস্যা সমাধান

“বিপণনকর্মী হিসেবে সাধারনত আমরা গ্রাহকদের দেয়া নিত্যনতুন সমস্যার মুখোমুখি হই, যেগুলো আমাদের সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো উপায়ে সমাধান করতে হয়। তাই একজন ভালো বিপণনকর্মী হতে হলে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা থাকা জরুরি।

উদাহরণ হিসেবে ধরুন- আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে এবং গ্রাহকের ক্যাম্পেইন ঠিকভাবে চলছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হচ্ছে। অবস্থা এমন হলে নিশ্চিত করুন যে- ব্যাপারটা যতটা ভালো হওয়া সম্ভব, ঠিক ততটাই হচ্ছে। আজকালকার একজন বিপণনকর্মীকে যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো ধরনের সমস্যার সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো সমাধান দেয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে।”

ব্যক্তিগত: ইতিবাচকতা

“ডিজিটাল মার্কেটিং একটি দ্রুতগতির ক্রমবর্ধমান শিল্প। এখানে প্রতিটি দিনই ভিন্ন এবং আমরা নিত্যনতুন সমস্যা মোকাবেলা করে থাকি।
ইতিবাচক থাকার ক্ষমতাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো কাজের জন্য দলকে পুরস্কৃত করা কিংবা বিপদজনক ডেডলাইনের জন্য রাত জেগে কাজ করা- এসব কিছুর জন্য ইতিবাচক ও প্রাণোচ্ছল নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। কেননা এটাই দলগুলোকে অনুপ্রেরণা যোগায় এবং একটা চমৎকার কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে।”

ড্যানিয়েল উইলকিনসন, হেড অফ পেইড মিডিয়া, জেলিফিশ

লিখেছেন আন্না আইজ্যাক।

www.telegraph.co.uk সাইটে পূর্বপ্রকাশিত।

আপনি উদ্যমী!
আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চান?  

তাড়াতাড়ি সাবস্ক্রাইব করুন।

আমাদের সেরা কনটেন্ট আপনার ইমেইলে পৌছে যাবে প্রতি সপ্তাহে।  

Invalid email address
আপনি যেকোনো সময় আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।  

মন্তব্য করুন