আপনার সাফল্য কামনায় ওয়ারেন বাফেটের ৬টি অসাধারণ টিপস
ওয়ারেন বাফেট সাফল্য এবং সম্পদ তৈরির বিষয়ে একটি পরিচিত নাম। ওমাহার এই জ্ঞানী ব্যক্তি আমাদেরকে অবাধে সরল কিন্তু জ্ঞানগর্ভ পরামর্শ দিয়েছেন, যারা তার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে আগ্রহী।
শুধুমাত্র একটিমাত্র গুগল সার্চে, আপনি তার অসংখ্য উক্তির মধ্যে বেশ কিছু সেরা নেতৃত্ব এবং জীবন সম্পর্কিত পরামর্শ পাবেন যা কিনা তার বিনিযোগের দুনিয়ার বাইরে।
এই ছয়টি সাফল্যের টিপস তাদের সহজ প্রাসঙ্গিকতার কারণে আমার উপর অবিশাস্য রকমের প্রভাব ফেলেছে। টিপসগুলো হলো-
১) “সুনাম তৈরিতে ২০ বছর সময় লেগে যায় আর তা ধ্বংস করতে লাগে মাত্র পাঁচ মিনিট। আপনি যদি এটা চিন্তা করে কাজ করেন, তাহলে আপনি অন্যভাবে কাজ সম্পাদন করবেন।”
তিনি এই উক্তিটি করেছিলেন অনেকদিন আগে বার্কসায়ার হাথাওয়ের অংশীদারদের কাছে লেখা একটি চিঠিতে। যে কারো সারা জীবনের ক্যারিয়ার বা সুনাম হঠাৎ করেই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে যেতে পারে। এই উক্তিটির মাধ্যমে বাফেট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, জীবনের সবক্ষেত্রের কাজেকর্মে সততা বজায় না রাখলে, আপনি ব্যর্থ হতে যাচ্ছেন।
২) আপনার সেই চাকরিই করা উচিত, যা আপনি করবেন যদি আপনি স্বাধীনভাবে ধনী হন।
এই পরামর্শটি বাফেট দিয়েছিলেন ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পাস করা ছাত্রদের প্রতি তার দেয়া প্রারম্ভিক বক্তৃতায়। তিনি বলেছিলেন, আপনি যখন নতুন কিছু শিখবেন, তা নিয়ে উদ্দীপ্ত থাকবেন এবং আপনি সকাল সকাল কাজে ফিরবেন। আপনি সেটিতেই সফল হবেন। বাফেট আহবান জানিয়েছেন আমাদের প্রতি যে, আমরা যা করতে ভালবাসি এবং যা আমাদেরকে উদ্দীপ্ত করে তা খুঁজে বের করে সেটিকেই আমাদের পেশা বানাতে।
৩) নিজের থেকে উত্তম মানুষদের সাথে মেলামেশা করা অধিকতর ভালো। আপনার থেকে ব্যবহার ভালো এমন সঙ্গী নির্বাচন করুন এতে আপনিও সেদিকে ধাবিত হবেন।
এই উক্তিটি বাফেট করেছিলেন ওমাহা, নেব্রাস্কাতে হওয়া বার্কসায়ার হাথাওয়ের বার্ষিক সভাতে। এটি ক্যালিফর্নিয়া থেকে আসা একটি ১৪ বছরের ছেলের প্রশ্নের উত্তর ছিল, যে জিজ্ঞেস করেছিল তরুণদের সফল হতে তিনি কি পরামর্শ দেবেন। বাফেট আমাদেরকে জীবনের জন্য একটি শিক্ষা শিখিয়েছেন, বয়স যাই হোক না কেন, অধিকতর সফল মানুষদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট, এবং গুনাবলিগুলো যদি আমরা নিজেদের মধ্যে আনতে পারি তাহলে তা আমাদেরকে নেতা, বিনিযোগকারী, কর্মী, এবং মানুষ হিসেবে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
৪) “আপনার একজন মানুষের মধ্যে সাধারণত তিনটি জিনিস দেখা উচিত: বুদ্ধিমত্তা, উদ্যম, এবং সততা।এবং তাদের মধ্যে যদি শেষেরটা না থাকে, তাহলে বাকি দুটি নিয়ে আর মাথা ঘামিয়েন না।”
চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিষ্ঠানে নিতে কোন গুনাবলিগুলো দেখা উচিত তাই নিয়ে বাফেট কযেক বছর আগে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন। শেষের গুনটি একেবারেই বাঞ্চনীয়। আপনি যখন সৎ কর্মী নিয়োগ দিবেন, তারা আপনাকে তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ দেবে না। বাফেট আরো বলেন: “যদি আপনি অসৎ কর্মী নিয়োগ দেন, তারা যেন বোকা আর অলস হয় সেটাই হোক আপনার চাওয়া।” এই উক্তিটি আমাকে হাসলেও, এটা কিন্তু সত্যি। মানুষ যারা সত্য, সততা, এবং নৈতিকতাকে ধারণ করে, তারা হৃদয়ের কথা শুনে এবং ঠিক কাজটাই করে এমনকি যখন কেউ দেখার নেই।
৫) “সফল এবং দারুনভাবে সফল ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য হলো – দারুনভাবে সফল ব্যক্তিরা প্রায় সবকিছুতেই না বলেন।”
প্রতিদিনের দারুন ব্যস্ততার মধ্যে, বাফেট অনেক আগেই সময়ের মুল্য বুঝেছিলেন। তিনি নিজের কাজের সীমা নির্ধারণের চর্চা সুনিপুনভাবে আয়ত্ত করেছিলেন।তার এই পরামর্শ সবার জীবনের প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত গ্রহনের সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য।আমাদেরকে জানতে হবে জীবন সহজ করার পন্থাগুলো।এর মানে হলো প্রতিদিন আমাদের দিকে আসা অগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে বার বার না বলা, এবং ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে এমন কাজকে হ্যাঁ বলা এবং সেদিকে ফোকাসড থাকা।
৬) ভালো যোগাযোগ দক্ষতা ছাড়া মানুষ আপনাকে অনুসরণ করবে না যদিও আপনি পাহাড়ের অপরপাশে কি আছে তা দেখতে পান এবং তারা পায় না।
বাফেট এই চমৎকার পরামর্শটি দিয়েছিলেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির এমবিএ শিক্ষার্থীদের।এই উক্তিটির আগে বাফেট আরো বলেছিলেন: “তোমাদের এই বয়সে, আরো ভালোভাবে পারস্পরিক যোগাযোগে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে তোমরা নিজেদেরকে আরো উন্নত করতে পারো।তোমাদের জীবনের অর্জন অনেকগুনে বেড়ে যাবে, যদি তোমরা অন্যের সাথে ভালোভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারো। ডেল কার্নেগি থেকে ১৯৫২ সালে, পারস্পরিক যোগাযোগে দক্ষতার উপর পাওয়া ডিপ্লোমাটি হলো একমাত্র ডিপ্লোমা যা আমি আমার অফিসের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখি।”
লিখেছেন মার্সেল সচওয়ানতেস।
www.inc.com সাইটে পূর্বপ্রকাশিত।
মন্তব্য করুন